Tuesday, June 11, 2019

কাঙ্ক্ষিত বা সফল ক্যারিয়ার অর্জনে জন্য করনীয়

কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার অর্জনে নেটওয়ার্কিং বা যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কথায় আছে ‘চাকরি পেতে মামার জোর লাগে’। আর নেটওয়ার্কিং এই মামা সৃষ্টিতে বেশ সহায়ক। সুতরাং বুদ্ধিমানের কাজ হলো নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে মামা সংগ্রহ করা। আর কাক্সিত চাকরি বা পদটি বাগিয়ে নেয়া। আবার ব্যবসায়ে সফলতা অর্জনের জন্যও নেটওয়ার্কিংয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু কীভাবে তৈরি করবেন নেটওয়ার্ক?
নেটওয়ার্ক রাতারাতি তৈরি করার কোনো বিষয় নয়। আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমেই চাকরি পাওয়া বা ব্যবসায়ে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়। জীবনের সকল ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক তৈরিই সফল নেটওয়ার্কিংয়ের গোপনসূত্র।
নেটওয়ার্ক সৃষ্টিতে অপরিহার্য ৫ উপাদান আলোচিত হয়েছে এই নিবন্ধে।
১. বিজনেস কার্ড
বিজনেস কার্ড। যাকে আমরা ভিজিটিং কার্ড হিসেবেই বেশি চিনি। বর্তমান ডিজিটাল যুগেও ছোট এই জিনিসটি বেশ গুর”ত্বপূর্ণ। কারো সাথে নতুন পরিচয়ের ক্ষেত্রে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে কাউকে দেয়ার মতো কোনো জিনিস আপনার থাকা চাই। আর সেটি হতে পারে আপনার বিজনেস কার্ড। কারণ, আপনি অনুষ্ঠান থেকে চলে গেলেও আপনার কার্ডটি থেকে যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে। আর তাঁকে আপনার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে এই কার্ড।
আপনি যদি শিক্ষার্থী বা বেকার হোন তবে কার্ডে আপনার নাম, মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা উল্লেখ কর”ন। আর যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কিংবা নিজেরই কোনো প্রতিষ্ঠান থাকে তবে নাম, মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা ছাড়াও আপনার পদবি এবং প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে ভুলবেন না। মাত্র আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ টাকায় ১ হাজার কার্ড তৈরি করা যাবে।

২. ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাড্রেস
নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যক্তিগত ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার নিশ্চিত করুন। কখনোই প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করবেন না। কারণ আজ আপনি যেখানে চাকরি করছেন, কাল সেখানে চাকরি না-ও করতে পারেন। সুতরাং নেটওয়ার্কিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বা ব্যবসায়িক ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করবেন না। তাছাড়া আপনার সম্পর্কে বিশেষ পরিচয় প্রদান করে এমন ঠিকানাও ব্যবহার করবেন না। যেমন : foodie327@ অথবা talk2susie@ ইত্যাদি। তবে আপনার পেশাগত পরিচয় বহন করে এমন শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন : journalist@। প্রতিষ্ঠান নিজের মালিকানাধীন হলে প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে পারেন। তবে একান্ত ব্যক্তিগত ঠিকানা থাকা বাঞ্ছনীয়।

৩. সামাজিক মিডিয়ায় উপস্থিতি
বর্তমানে কারো সাথে প্রথম পরিচয়ের পর অধিকাংশ মানুষই আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ফেসবুক, টুইটার, বিশেষ করে LinkedIn প্রভৃতি নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে যান। LinkedIn একটি প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক। এতে আপনার প্রোফাইল না থাকলে আজই একটি তৈরি করুন। আর প্রোফাইল থাকলে আপ টু ডেট রাখুন। এখানকার গ্রুপগুলো ইগনোর করবেন না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ অ্যালামনাই কিংবা শিল্প প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক গ্রুপগুলোতে নিজেকে সংযুক্ত রাখুন। এসব গ্রুপ চাকরি খোঁজার বেশ উপযুক্ত স্থান।
এছাড়া ফেসবুক গ্রুপ কিংবা পেইজেও বিভিন্ন চাকরির খবরাখবর পাওয়া যায়। এগুলো কারো সাথে যোগাযোগের উত্তম জায়গাও বটে। তবে কোনো পোস্ট বা ছবি আপলোডের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। কেননা কোনো কোনো চাকরিদাতা এখন ফেসবুকে আপনার প্রোফাইল ও স্ট্যাটাস দেখে আপনার ‘স্ট্যাটাস’ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন।

৪. আপ টু ডেট সিভি
নিজের ব্যক্তিগত কম্পিউটার বা ল্যাপটপে একটি আপ টু ডেট সিভি রাখুন। নিজের কম্পিউটার না থাকলে বন্ধু-বান্ধব বা অন্য কারো কম্পিউটারে আপডেট করে পেনড্রাইভে রাখতে পারেন। এমনকি আপনি যদি এখনই চাকরিপ্রত্যাশী না হন তবুও। কারণ যে কোনো সময় আপনার দরকার হতে পারে। আর আগামী দিনের প্রস্তুতি কখনো ক্ষতিকর হয় না। এমনও হতে পারে যে, কোনো অনুষ্ঠানে একজনের সাথে আপনার সাক্ষাৎ হলো যিনি আপনার কাছে সিভি চাইলেন। আর আপনি তা আপডেট করে দেবেন বলে এক সপ্তাহ দেরি করলেন!

৫. সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি
সর্বশেষ উপাদান কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বা অ্যাটিচিউড। যিনি আপনাকে সাহায্য করবেন এমন কাউকে খোঁজার পরিবর্তে আপনি যাকে সাহায্য করবেন তাকে খুঁজুন।
সুযোগসন্ধানী লোকের ব্যাপারে মানুষ সতর্ক থাকে। তাই কারো বিজনেস কার্ড সংগ্রহ করে কোনো সুযোগ বা আনুকুল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে তা ব্যবহারের পরিবর্তে দীর্ঘ মেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

ইন্টারনেট হইতে সংগ্রহীত
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
তানবীর আহমেদ