বর্তমান যুগ বার্চুয়াল যুগ। এখন সবাই খুব সহজেই সবকিছু শিখতে চায় । বর্তমানে তা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব বলে অনেকেই মনে করে থাকে। স্মার্টফোন এর কল্যাণে এখন সবাই স্যোসাল মিডিয়ায় সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। তাই মোবাইল এর বিভিন্ন এলার্ট অনেক সময় পড়ার মনযোগ নষ্ট করে থাকে।
আবার অনেকেই বলতে শুনা যায় যে, পড়ালেখায় মন বসেনা । আসলেই বর্তমান বার্চুয়াল জগতে আসলে পড়ালেখায় মনোযোগ দেয়া কঠিন । আসুন জেনে নেই কিভাবে পড়ালেখা মনোযোগ বাড়ানো যায়। আসুন ইন্টারনেট হইতে সংগ্রহিত কিছু উপায় জেনে নেই।
জোরে শব্দ করে পড়ঃ
মনে মনে পড়ার অভ্যাস আছে আমাদের অনেকের। এই অভ্যাস টা এখনি ত্যাগ করো। মনে মনে পড়ার সময় আমরা খুব স্বাভাবিক ভাবেই অন্য চিন্তার মাঝে ডুবে যাই কখন আমরা নিজেরাই তা টের পায় না। কিন্তু মুখে উচ্চারণ করে বা শব্দ করে পড়লে অন্য চিন্তা করামাত্রই তোমার পড়ার শব্দ থেমে যাবে, ফলে সহজেই বুঝতে পারবে কখন তুমি বিচ্ছিন্ন হচ্ছো।
রিডিং পড়ার মাঝেই রিভিশন করঃ
মানুষ তার অবচেতন মনে অনেক সময় কিছু করতে পারে। দেখা যাচ্ছে, তুমি শব্দ করেই অনর্গল রিডিং পড়ে যাচ্ছো অথচ তোমার মস্তিষ্কে সেগুলো থাকছে না,তার কারন তুমি একইসাথে অন্য কোনোকিছু চিন্তা করছো।
এজন্য রিডিং পড়ার সময় মাঝে মাঝে কয়েক লাইন পড়ার পর না দেখে বলার চেষ্টা করবে। তাহলে অবচেতন মন আর রিডিং পড়বে না, অন্য চিন্তাও মাথায় আসার সুযোগই পাবে না।
মনস্থিরঃ
অমনোযোগীতা আনতে পারে এমন সব বিষয় মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আপনার পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু হাতের কাছেই রাখুন যাতে বারবার উঠতে না হয়। অনেকের বারবার ফোন আসে পড়ার সময়।খুব বেশি দরকার না হলে ফোন বন্ধ করে রাখতে পারেন। পড়তে বসার অন্তত ৫ মিনিট আগ থেকে মনস্থির করু
শিক্ষকতাঃ
আপনি যে বিষয় পড়বেন সেটা অন্য কাউকে শিক্ষা দিন।এমন কাউকে যে সে বিষয়টা সম্পর্কে জানেনা। শিক্ষকতা নিজের জ্ঞান আহরণের জন্য সবচেয়ে উত্তম উপায়। যেমন- আপনি যদি গণিত কম বোঝেন বা গণিত নিয়ে পড়তে চান ভবিষ্যতে আপনার উচিত এখন থেকেই গনিতের উপর শিক্ষা দান করা অন্যদের। এতে আপনার নিজেরও চর্চা থাকবে বিষয়টির উপর।
ইন্দ্রিয় সক্রিয়ঃ
আপনার সব ইন্দ্রিয় সক্রিয় করুন। আপনি একটি বিষয় যতই পড়ুন না কেন সারাদিন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তা মনে রাখতে পারবেন না অথবা বুঝবেন না যতক্ষণ না আপনি বিষয়টি আপনার চারপাশের কিছুর সাথে সম্পৃক্ত করতে পারছেন। চারপাশের জিনিসের সাথে আপনি আহরণ করা জ্ঞান মিলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন।
সংযোগঃ
প্রত্যেকটি বিষয়, ধারণার মাঝে সংযোগ স্থাপন করতে শিখুন। একটি আরেকটির সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আপনার নিজের জ্ঞানের পরিধিও অনেক বাড়বে।
নতুন ধারণা ও পরিচিত ধারণার মাঝে সংযোগঃ
আপনি যখন নতুন কোন বিষয় বা তথ্য সম্পর্কে জানবেন তখন তা আপনার বর্তমানের পরিচিত কোন জানা তথ্য বা ধারণার সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করুন। এতে পরীক্ষার সময় আপনার সে নতুন তথ্য ভুলে যাবার আশঙ্কা কম থাকে।
মস্তিষ্কের উপর চাপ না দেয়াঃ
পরীক্ষার আগে কিছুদিন পড়লে আপনার মস্তিষ্কের উপর চাপ পড়তে পারে। তাই সবসময় অল্প অল্প পড়ার মাঝে থাকবেন। এতে করে আপনার উপর কোন মানসিক চাপও থাকবেনা আর আপনি পরীক্ষার আগে একটু রিভিশন দিলেই আপনার হয়ে যাবে।
তথ্যের ধরনঃ
পড়ার সময় প্রত্যেকটি তথ্যের ধরন বোঝার চেষ্টা করুন। যেমন- যে তথ্য দেয়া আছে সেটা কি গাণিতিক তথ্য, নাকি ঐতিহাসিক কোন তথ্য, নাকি কোন ব্যক্তি বা দেশ সম্পর্কে তথ্য এসব বিষয়ে ভালো করে বুঝে তারপর মুখস্ত করতে হবে। না বুঝে মুখস্ত করলে তা কোনদিন মনে থাকবেনা।
সুদৃঢ় জ্ঞানের ভিতঃ
সব সময় পুস্তকি বিদ্যার সাথে সম্পৃক্ত করলে হবেনা। অন্যান্য বিভিন্ন বই থেকে আহরিত জ্ঞানের সাথেও সম্পৃক্ত করতে হবে। সেজন্য দেশ ও দেশের বাইরের অনেক লেখকের বই পড়ার অভ্যাস সব সময় রাখতে হবে। এটা শুধু মাত্র বিনোদনের জন্য নয়, বরং অনেক কিছু সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা যায় আর নিজের জ্ঞানের ভিত্তিটা অনেক মজবুত ও শক্ত করে গড়ে তোলা যায় যাকে ভিত হিসেবে ধরে আপনি আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে নিতে পারেন।
নিজস্ব রীতিঃ
যখন কোন বিষয় পড়বেন তখন নিজের একটা আলাদা রীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করুন আর বিষয়টির একটি ছবি আপনার মনের মধ্যে এঁকে নিন। এতে বিষয়টি আপনার খুব সহজেই মনে থাকবে।
নোটঃ
আপনার পড়ার মূল লক্ষ্য কিন্তু সেটাকে বুঝে জ্ঞান আহরণ করা আর পরীক্ষায় ভালো করা। কিন্তু আপনি যদি নাই বোঝেন তাহলে ভালো করার প্রশ্নই আসেনা। তাই যে বিষয়টি বুঝবেন না তার পেছনে একটু বেশি মনোযোগী হন। প্রয়োজনে খাতায় লিখে, করে বোঝেন। কারণ না বুঝে মুখস্ত করে সেটা বেশিক্ষণ মনে রাখা কোন ছাত্রের পক্ষেই সম্ভব নয়।
উপরোক্ত উপায় মেনে চললে আপনি খুব মনোযোগের সাথে লেখাপড়া করতে পারবেন আশা করি আর আপনার পরীক্ষায়ও আশানুরূপ ফল প্রদানে এটি সহায়ক হবে। বর্তমান যুগে জ্ঞান আহরণ ছাড়া কোন বিকল্প নেই। প্রতিযোগীতার এই যুগে আপনার কাছে যত জ্ঞান থাকবে তাই একসময় আপনার সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে।
এইতো গেলো আমার ফর্মাল আলোচনা।
এবার একটু ইনফর্মাল হই : যে কোন কাজ শুরু করার আগে আপনি মানসিকভাবে স্থির হয়ে নিন। “Meditation” শব্দটার সাথে সবাই পরিচিত। তাই খানিকটা চেষ্টা চালিয়ে দেখুন আশা করি ভালোভাবেই শুরুটা করতে পারবেন। ভালো ছাত্র বা ছাত্রীর সাথে নিজেকে কখনোই তুলনা করবেন না, তাহলে নিজেই মনোযোগ হারিয়ে ফেলবেন। আর্থিক ব্যাপারটাও অনেকের দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে থাকে যদি পারেন এটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না। মনে বল রাখুন কোন না কোন উপায় হবেই। সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা রাখুন তিনি সব ঠিকভাবে চালনা করবেন। যদি পারেন গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন এতে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আরও অনেক বিষয় রয়েছে।
সর্বশেষে দুটি কথা মনে রাখা জরুরি:
১. আপনার পিতামাতা আপনার পড়ালেখার জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী সর্বচ্চ চেষ্টা করে থাকে তাই তাদের প্রতিটা টা ত্যাগকে আপনি মূল্যায়ন করবেন।
২. আপনার সৃষ্টিকর্তার নিকট আপনার ও আপনার আশে পাশের মানুষের জন্য প্রার্থনা করুন।
ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত
0 comments:
Post a Comment