Saturday, August 26, 2017

জীবনকে সফল ও উপভোগ্য করতে এবং সর্বোপরি কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পেতে ফিটনেস ধরে রাখতে হবে

জীবনকে সফল ও উপভোগ্য করতে এবং সর্বোপরি কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পেতে ফিটনেস ধরে রাখতে হবে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মনও থাকে প্রফুল্ল। মনকে প্রফুল্ল রাখতে এবং কাজে দ্বিগুণ মনোযোগী হতে সকালের ব্যায়ামের বিকল্প নেই।আসলে একে ব্যায়াম না বলে বলতে পারেন নিয়ম মেনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া... অর্থাৎ আমার সাধারণ যেই কাজ গুলো করি তা যদি নিয়ম মেনে করি তাহলে আমাদের এক্সট্রা ব্যায়াম করা লাগে না(অধিকাংশের ক্ষেত্রে ) ...
আমি জানি আমারা সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত আলাদা করে ব্যায়াম করার মত সময় কারো হাতে নাই ... কিন্তু নিজেকে ফিট রাখার ইচ্ছা সবারই আছে ... কিন্তু এর জন্য এক্সট্রা পরিশ্রম করতে অধিকাংশ বন্ধুই রাজি না ...
তাই আপনাদের জন্য বিভিন্ন মানবদরদী চিকিৎসক ও গবেষকের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে কিছু লেখার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস... এই লেখা পড়ে আপনি কিছুটা হলেও ফিট থাকতে পারবেন ...
১. উপযুক্ত ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস এবং প্রফুল্ল মনই হচ্ছে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। আসলে আমাদের জীবনে এত দুশ্চিন্তা বা টেনশন থাকে যে, আমরা হাসিখুশী থাকতে পারি না। অথচ কথায় আছে, ক্যান্সারে যত না কবর ভরেছে তার চেয়ে বেশী ভরেছে টেনশনে। সুতরাং ভালভাবে বাঁচতে চাইলে মনকে প্রফুল্ল রাখতে হবে। এ জন্য ভাল চিন্তা ও ভাল কাজের কোনো বিকল্প নেই। সেই সাথে নিজেকে জড়াতে হবে কোনো না কোনো সৃজনশীল কাজের সাথে।
২. চার বছর বয়স থেকেই ব্যায়াম শুরু করা উচিত। ব্যায়াম অনেক রকম। যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা ও দৌড়-ঝাঁপ ইত্যাদি ব্যায়াম, সাইকেল কিংবা অন্যান্য যন্ত্রপাতি চালিয়ে ও ভারি কিছু ওপরে তোলার মাধ্যমে ব্যায়াম, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মালিশের দ্বারা ব্যায়াম এবং দেহকে বিশেষ ভঙ্গিমায় স্থির রেখে যোগ ব্যায়াম। সব ব্যায়ামেই উপকার হয়। তবে বয়স, শারীরিক অবস্থানুযায়ী প্রয়োজন, পরিবেশগত সুবিধা, সময়ের সীমাবদ্ধতা ও মানসিক প্রবণতার কথা ভেবে ব্যায়াম বেছে নেয়া ভাল। কিন্তু কিছু ব্যায়াম আছে যা একেবারে শয্যাশায়ী বা চলাফেরায় অক্ষম না হলে সকলের পক্ষেই করা সম্ভব। এ লেখায় সেগুলোর ওপরেই জোর দেয়া হয়েছে।
৩. প্রতিদিন ৪৫ মিনিট জোরে হাঁটুন। একবারে না পারলে কয়েকবারে। এতে দেহের সমস্ত— অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নমনীয় থাকে ও মগজে প্রচুর অক্সিজেন ঢোকায় দুশ্চিন্তা কমে। হাঁটায় মহিলাদের ঋতু বন্ধজনিত হাড়ক্ষয় এবং অন্যান্য জটিলতাও রোধ হয়।
৪. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া এবং মালিশ করা ভাল ব্যায়াম। কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন সহজ হওয়ায় চর্বি জমতে পারে না। এখানে দেহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থানে মালিশের উল্লেখ করা হল যার দ্বারা কাছের তো বটেই, দূরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও উপকৃত হয়।
ক) যখনই সম্ভব পুরো মাথা মালিশ করলে মাথায় ভালোভাবে রক্ত চলাচল করে বলে মগজ তথা স্নায়ুকেন্দ্র ভাল থাকে ও সহজে চুল পড়ে না কিংবা পাকে না।
খ) প্রত্যহ ১০ মিনিট হাত ঘুরিয়ে ভেজা কপাল মালিশ করলে শারীরিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী পিটুইটারি গ্রন্থি সতেজ থাকে।
গ) কানের সামনে-পেছনে মালিশ করলে এবং কানের লতিসহ কান মোচড়ালে পাকস্থলী ভাল থাকে।
ঘ) নাকের ডগা হাতের তালু দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ডললে কিডনি সবল থাকে।
ঙ) শরীর ও মনের যে কোনো চাপের প্রথম শিকার হচ্ছে ঘাড়। কাজেই ঘাড় মালিশ করলে এবং মাথা ওপর-নিচ ও চারপাশে হেলিয়ে ঘোরালে ঘাড় নমনীয় থাকে।
চ) চোয়ালের নিচে গলার দু’পাশে মালিশ করলে থাইরয়েড ও টনসিল গ্রন্থি ভাল থাকে।
ছ) কনুইয়ের জোড়ায় হালকা চাপ দিয়ে এবং কনুই ও কব্জির মাঝখানে স্বাভাবিকভাবে মালিশ করলে হাত খুব সচল থাকে।
জ) নাভির চারপাশে মালিশ করলে দুশ্চিন্তা কমে এবং চিৎ হয়ে শুয়ে এটি করলে সহজে আন্ত্রিক গোলযোগ হয় না।
৫. শুয়ে পেটের ওপরে দু’হাত রেখে গভীরভাবে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে পেট ফুলিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়লে ফুসফুসের শক্তি বাড়ে এবং দিনে ২০ মিনিট এটি করলে ভাল ঘুম হয়। দেহের সার্বিক শক্তি বৃদ্ধি ও তারুণ্য ধরে রাখার জন্য একটানা যতক্ষণ পারা যায় মলদ্বার সংকোচন করা ও ছেড়ে দেয়া খুবই ভাল একটি ব্যায়াম।
৬. স্নায়ুতন্ত্রের এক বড় অংশ শেষ হয়েছে হাতের তালুতে ও পায়ের তলায়। এ জন্য হাততালি দিলে চোখের ছানি দূর হয়, উচ্চ রক্তচাপ কমে এবং স্মরণশক্তি বাড়ে। পায়ের তলা কর্কশ কোনো কিছু, যেমন ধুন্দুলের ছোবড়া কিংবা প্লাস্টিকের ব্রাশ দিয়ে দিনে মোট ২০ মিনিট ঘষলে দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই উদ্দীপ্ত হয়, সতেজ থাকে এবং রোগাক্রান্ত হলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়। বিশেষতঃ অনিদ্রা, হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধে এবং মহিলাদের গর্ভাবস্থায় খুব উপকার পাওয়া যায়। পায়ের তলা ঘষার পর আঙ্গুলগুলো ওপর-নিচ করে টানুন।
৭. মুখ ধোয়ার সময়ে চোখে ২৫ বার পানির ঝাপটা দিন। নাক দিয়ে পানি যতটা পারা যায় টানুন ও ছাড়–ন। এতে সহজে সর্দি-কাশি হবে না। উপরন্তু এটি মাথাব্যথা, সাইনাসাইটিস ও মাইগ্রেইনে খুব উপকারী।

0 comments:

Post a Comment